মেহেদী হাসান জুয়েল :
ভারতের গজল ডোবা ব্যারেজের অধিকাংশ গেট খুলে দেয়ায় প্রচণ্ড গতিতে পানি
বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে। এতে ভাসছে তিস্তাপাড়ের লালমনিরহাট। পাউবো
সূত্রে জানা যায়,রবিবার রাত থেকে নদীর পানি বাড়তে শুরু করে। দেশের বৃহত্তম
সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের দোয়ানী পয়েন্টে সোমবার রাত নয়টা পর্যন্ত
বিপদ সীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।পাউবো আরো জানায়, পানির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারাজেরও অধিকাংশ গেট খুলে দেয়া হয়েছে। পানিতে পাটগ্রামে অবস্থিত বহুল আলোচিত বিলুপ্ত ছিটমহল আঙ্গোরপোতা-দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিঙ্গিমারী, সির্ন্দুনা, পাটিকাপাড়া ও ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নসহ পাঁচ উপজেলার চর এলাকাগুলোর ১৮টি গ্রামের ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ-আল-মামুন জানান, বর্তমানে সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের শিবের কুঠিতে ক্ষতিগ্রস্ত বাধ মেরামতের জন্য কাজ করছি।
ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে পানি আসায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। যে কারণে তিস্তার তীরবর্তী এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। আমরা প্রতি মুহূর্তে বন্যা পরিস্থিতি মনিটরিং করছি। তিস্তার পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। আরও কি পরিমাণ পানি আসবে তা ধারণা করা যাচ্ছে না।
তিস্তা ব্যারেজ সূত্র জানায়, তিস্তা পাড়ের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সোমবারের ভারী বর্ষন ও ভারতের গজল ডোবা ব্যারেজের অধিকাংশ গেট খুলে দেয়ায় এঅবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই ঘর বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছে। হু-হু গতিতে পানি তিস্তা ও ধরলার দিকে ধেয়ে আসছে। পানির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে দেয়া হয়েছে। ফলে তিস্তার পানিতে জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার ধুবনী গ্রামে দুইটি স্থানে বাঁধ ভেঙ্গে গেছে।
আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, গোবরধন, ছালাপাক,লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর ও গোকুন্ডার এলাকার কয়েক হাজার একর আমন ধানের বীজ তলাসহ অনেক ফসলের ক্ষেত ডুবে গেছে। দুর্ভোগে পড়েছে গবাদি পশু-পাখি গুলো।
সোমবার বিকালে তবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাতীবান্ধার সানিয়াজান ইউনিয়নের পানিবন্দিদের মাঝে শুকনা খাবার চিড়া ও চিনি বিতরণ করা হয়েছে।
এদিকে লালমনিরহাট জেলা সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের বুকজুড়ে বয়ে যাওয়া ধরলা নদীতেও ব্যাপক হারে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তলিয়ে গেছে চর এলাকার কয়েকটি গ্রাম। এছাড়াও চর এলাকাগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে গেছে। সেই সাথে দেখা দিয়েছে ধরলা নদী ভাঙ্গন।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবুল ফয়েজ মো. আলাউদ্দিন খাঁন জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে পানিবন্দি পরিবারগুলোর খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। ত্রাণের জন্য উচ্চ পার্যায়ে আবেদন করা হয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় ত্রাণ বিতরণ শুরু করা হয়েছে।
.png)

0 মন্তব্যসমূহ