Header Ads Widget

লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি, চরম ত্রাণ সংকট,অনাহারে অর্ধাহারে পানিবন্দি মানুষ ধসে গেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৬টি বাধ, বন্ধ রয়েছে শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রেল যোগাযোগ বন্ধ।

মেহেদী হাসান জুয়েল ঃ লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। পানিবন্দি মানুষগুলোর মাঝে দেখা দিয়ে ভয়াবহ ত্রাণ সংকট। অনাহারে অর্ধাহারে রয়েছে পানিবন্দি লাখো মানুষ। ত্রাণ জন্য তারা ছুটছে বিভিন্ন জনপ্রতিনিধির কাছে। জেলা প্রশাসন সুত্র জানিয়েছে,লক্ষাধিক বানভাসি মানুষের জন্য বরাদ্দ রয়েছে মাত্র দেড়’শ টন চাল। যা প্রয়োজনের তুলনায় অতি নগন্য। এদিকে সোমবার সকালে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী মোস্তাফিজার রহমান জানান, তিস্তা নদীর কমে  পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদ সীমার ৫ সে: মি:  ও ধরলা নদীর পানি কুলাঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১৩৫ সে;মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সোমবার ভোর রাতে তিস্তা ও ধরলার প্রবল ¯্রােতে ভেঙ্গে গেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৬টি বাধ। বাধ ভেঙ্গে আরো ১৯টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। বন্ধ রয়েছে শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সারাদেশের সাথে দ্বিতীয় দিনের মতো রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।  পানিবন্দি মানুষগুলোর মধ্যে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ খাদ্য সংকট। অনেকেই সারাদিনে এক বেলা খাবারও জোটাতে পারছে না।  পরিবার পরিজন ও গরু ছাগল নিয়ে আজও মানুষ ছুটছে নিরাপদ স্থানে । আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন স্কুল, কলেজের বারান্দায় বাঁধে ও উচু স্থানে । শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠার কারণে বন্ধ রয়েছে শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম। এছাড়্ওা বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গনের কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে লালমনিরহাট-বুড়িমারী রেল যোগাযোগ । তিস্তা ও ধরলার প্রবল স্রোতে সোমবার ভোরে শতাধিক বসতবাড়ি বিলিন হয়েছে। বাসভাসি লোকজন অভিযোগ করে বলেছেন,গত ৫দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে থাকলেও তারা পাননি তেমন কোন সাহায্য সহযোগিতা। অনাহারে ও অর্ধাহারে কাটছে তাদের দিন। সরকারিভাবে যে ত্রাণ ও শুকনা খাবার দেওয়া হচ্ছে তা চাহিদার তুলনায় একেবারেই নগন্য। 
কুলাঘাট ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী বলেন,এর আগে ধরলার বন্যা ও ভাঙ্গন দেখছিলাম। কিন্তু এবার ধরলা যেন পাগল হয়ে উঠেছে। সামনে ও আশপাশে যা পাচ্ছে সব কিছু লন্ডভন্ড করে দিয়ে চলে যাচ্ছে। বানভাসি মানুষের আহাজারিতে ধরলার পাড় ভারি হয়ে উঠছে। কিন্তু সরকারের নিকট থেকে তেমন কোন সাহায্য সহযোগিতা না পাওয়া দুর্গত মানুষের পাশে দাড়ানো যাচ্ছে না বলে জানান এই ইউপি চেয়ারম্যান। এদিকে সোমবার দুপুরে কালিগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে ১৫’শ পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন সমাজকল্যান মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। সদরের কুলাঘাট ও বড়বাড়ি এলাকায় ব্যক্তিগত উদ্যেগে কয়েক’শ পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরন করেছেন সাবেক উপমন্ত্রী ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলূ।অন্যদিকে গত ৫দিন ধরে পানিবন্দি থাকা পরিবারগুলোর মাঝে ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে নানা পানিবাহিত রোগ। জেলা সির্ভিল সার্জন ডাঃ আমিরুজ্জামান বন্যা দুর্গত এলাকায় ৫৪টি মেডিকেল টিম কাজ করার কথা বলেও কোথাও কোন মেডিকেল টিমের কার্যক্রম চোখে পড়েনি। জেলা শিক্ষা অফিসার নবেজ উদ্দিন জানিয়েছেন,ভয়াবহ বন্যার কারনে জেলার ১৯৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
ত্রাণ সংকটের সত্যতা স্বীকার করে লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মোঃ শফিউল আরিফ জানিয়েছেন,সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত ১’শ ৬০ মেঃটন চাল এবং ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিতরণের কাজ চলছে। পর্যায়ক্রমে উপজেলা নিবার্হী অফিসাররা বিতরণ করবেন।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ