Header Ads Widget

সুবিধা বঞ্চিত প্রতিবন্ধী শিশুদের আলোর পথ দেখাবে "সুফিয়া সরকার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়"।।


মেহেদী হাসান জুয়েলঃ জন্ম থেকেই ঠোট কাটা ৮ বছরের শিশু সোলায়মানের। বাবা সাধারন দিনমজুর। কাজ করে যা পান তা দিয়ে কোন রকমে সংসার চালান তিনি।                      
              
বাড়িতে আরো দুটি সন্তান রয়েছে তার। একে অভাবের সংসার তার উপর বাচ্চাদের স্কুলের খরচ মেটাতেই হিমসিম অবস্থা সেখানে প্রতিবন্ধী সোলায়মান যেন মড়ার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দাড়িয়েছে। উপায়ন্তর না পেয়ে সোলায়মানের ভবিষ্যত আশাই ছেড়ে দিয়েছেন তিনি।
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার নামুরী মদনপুরের এই গ্রাম এবং গ্রামের আশেপাশে  সোলায়মানের মতো আরো শ'দেড়েক  বুদ্ধী প্রতিবন্ধী এবং অটিস্টিক শিশু রয়েছে। এরা যেন দুর্ভাগ্যকে সংগে নিয়ে জন্ম নিয়েছে।
গ্রামে লেখাপড়ার জন্য দুয়েকটি বিদ্যালয় থাকলেও অটিস্টিক ও বুদ্ধী প্রতিবন্ধী এই শিশুদের নিয়ে যেন ভাবার কেউ নেই।
এই গ্রামের শিক্ষিত যুবক শাহালম সরকার মিণ্টু। ছোট থেকে বেড়ে ওঠার কারনে গ্রামের প্রতি তার মায়াটাও যেন অপরিসীম। ছোট্ট গ্রামে এতগুলো বুদ্ধী প্রতিবন্ধি হওয়ায়  তাদের জন্য কিছু করা দরকার এই ভাবনা সব সময় ঘুরপাক খায় তার মাথায়। এক সময় ঢাকার এক উদারমনা ব্যক্তির সাথে কথা হলে তিনি তাকে অটিস্টিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কথা বলেন। ব্যস, মিণ্টু সরকার নেমে পরলেন বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কাজে। কিন্তু ভাবা যতটা সহজ, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ততটা সহজ নয়। স্কুলের জমি, শ্রেনীকক্ষ নির্মান এসবের জন্য প্রচুর টাকার প্রয়োজন।

মিণ্টু সরকার প্রথমে তার অবসর প্রাপ্ত শিক্ষিকা মায়ের স্বরনাপন্ন হন। সন্তানের আবদার শুনে মা এক কথায রাজি হয়ে যান। পেনশনের সিংহভাগ টাকাই তুলে দেন সন্তানের হাতে। এরপর নিজের চারটি গরু বিক্রয় এবং তার সন্তানের জন্য জমা সঞ্চিত অর্থ সব মিলিয়ে স্কুলের কাজে নেমে পরেন। তার এই মহান উদ্দ্যোগ দেখে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেন। রোফায় আলী নামে একজন ব্যক্তি স্বল্প মূল্যে বিদ্যালয়ের জন্য জমি রেজিস্ট্রি করে দেন।
বর্তমানে বিদ্যালয়ের একটি টিনসেড ঘড় নির্মান করে সেখানে বিদ্যালয়ের প্রাথমিক কাজ চালানো হচ্ছে এবং অনুমোদনের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। গত ১০ জানুয়ারী বিদ্যালয় প্রাংগনে বিশিষ্ট ব্যাক্তি, স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তি এবং বুদ্ধী প্রতিবন্ধী শিশু ও তাদের অভিভাবকদের নিয়ে অভিভাবক সমাবেশ করে শীত বস্ত্র বিতরন করা হয়।
এ ব্যাপারে স্কুলের মূল উদ্দ্যোক্তা ও  প্রতিষ্ঠাতা শাহালম সরকার মিণ্টুর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বুদ্ধী প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক শিশুদের আলোর পথ দেখানোর জন্য আমার এই প্রয়াস অব্যাহত থাকবে। স্কুল প্রতিষ্ঠার জন্য আমি সুইড বাংলাদেশের মহাসচিব বরাবরে আবেদন করেছি। কর্তৃপক্ষ মহাদয়ের কাছে আমার অনুরোধ , গ্রামের এই সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের কথা বিবেচনা করে স্কুলের কার্যক্রম চালানোর জন্য অনুমোদন দিয়ে তাদের বিকশিত হওয়ার পথ প্রশস্থ করবেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ