মুক্তিযুদ্ধে অন্যতম সহায়তা দানকারী ও সমাজ সেবক শহীদ আবুল কাশেমের ৪৫ তম
শাহাদত বার্ষিকী গভীর শ্রদ্ধায় পালিত হয়েছে বড়বাড়ি শহীদ আবুল কাশেম মহাবিদ্যালয়
প্রাংগনে।
দিনব্যাপি কর্মসূচির মধ্যে কোরআন তেলাওয়াত,আলোচনা সভা,মিলাদ মাহফিল ও শহীদের কবরে পুস্পমাল্য অর্পনের মধ্যদিয়ে শেষ হয়।
উল্লেখ্য, শহীদ আবুল কাশেম সাহেব বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু'র পিতা ।
শহীদ আবুল কাশেমের বর্নাঢ্য জীবনী নিয়ে সাংবাদিক মেহেদী হাসান জুয়েল তার ফেসবুক টাইম লাইনে একটি স্টাটাস দিয়েছেন। আমরা সেই স্টাটাসটি হুবুহু তুলে দিলাম লালমনিরহাট নিউজ24.com এর পাঠকদের জন্য।

দিনব্যাপি কর্মসূচির মধ্যে কোরআন তেলাওয়াত,আলোচনা সভা,মিলাদ মাহফিল ও শহীদের কবরে পুস্পমাল্য অর্পনের মধ্যদিয়ে শেষ হয়।
উল্লেখ্য, শহীদ আবুল কাশেম সাহেব বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু'র পিতা ।
শহীদ আবুল কাশেমের বর্নাঢ্য জীবনী নিয়ে সাংবাদিক মেহেদী হাসান জুয়েল তার ফেসবুক টাইম লাইনে একটি স্টাটাস দিয়েছেন। আমরা সেই স্টাটাসটি হুবুহু তুলে দিলাম লালমনিরহাট নিউজ24.com এর পাঠকদের জন্য।

"পিতা
তোমায় স্যালুট।
জন্ম দিয়েছো ১১টি আলোকিত পদ্ম।।"
জন্ম দিয়েছো ১১টি আলোকিত পদ্ম।।"
মেহেদী হাসান জুয়েল: গুণী মা'কে যদি রত্নগর্ভা বলা হয়,তাহলে গুণী পিতা'কে কি বলা হয়? রত্নপিতা।
আজ এমন একজন রত্নপিতার গল্প বলবো।
হ্যা,আমি সেই পিতার গল্প বলছি, যিনি শিশুকালেই তার বাবা-মাকে হারিয়েছেন।একমাত্র বড় ভাইয়ের আদর স্নেহে বড় হয়েছেন।হয়েছেন উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত।ভাবতেই অবাক লাগে,১৯২২ সালে জন্ম নেয়া এ মানুষটির গ্রাম থেকে স্কুলের দুরত্ব ছিলো ১২ কিলোমিটার পথ। সেসময় না ছিলো কোন যানবাহন, না ছিলো অবকাঠামোগত কোন উন্নতি।লেখাপড়া নিয়ে মানুষের সেরকম কোন আগ্রহ ছিলোনা।হাতের কাছে ভালো কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও ছিলো না।কিন্তু শিক্ষার আলোয় আলোকিত হবার অদম্য বাসনা যার হৃদয়ে লালিত,তাকে ধরে রাখার সাধ্য কার! বড়বাড়ি থেকে ১২ কিলোমিটার পথ হেটে লালমনিরহাট মডেল স্কুলে ক্লাস করে আবার ১২ কিলোমিটার পথ হেটে বাড়ি ফেরা, সেটা সহজ কোন ব্যাপার না। এই দু:সাহসিক কাজটি তিনি করেছেন,শুধুমাত্র শিক্ষাকে জয় করবার প্রতিজ্ঞা নিয়ে।
উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হলেন।সেসময় ইচ্ছে করলেই সরকারী চাকুরী নিতে পারতেন।হতে পারতেন অনেক বড় কোন কর্মকর্তা। উচ্চ শিক্ষিত লোকের তখন কদর বেশি। সেপথে না গিয়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন গ্রামটিকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার অভিপ্রায়ে পাঙা রানী লক্ষীপ্রিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে মানুষ গড়ার কারিগরে আবির্ভূত হলেন।জীবনের শেয দিন পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবেই নিয়োজিত ছিলেন।
হ্যা আমি সেই পিতার গল্প বলছি,যিনি বড়বাড়ি ইউনিয়নের আজীবন চেয়ারম্যান ছিলেন। মানুষের ভালোবাসা এবং বিশ্বাস এতোবেশী অটুট ছিলো যে,সবসময়ই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হতেন তিনি।
আমি সেই পিতার কথা বলছি,যিনি ১১টি সুযোগ্য সন্তানের জনক। যে সন্তানেরা অকালে পিতাকে হারিয়েও ভেংগে পরেননি। মায়ের সুশীতল ছায়ায় পিতার আদর্শকে লালন করে প্রত্যেকেই এক একটি তারা হয়ে মুক্তোর মতো জ্বল জ্বল করছেন।কেউ দেশে, কেউ বিদেশে নিজ নিজ গুণেই সমাদৃত হয়ে আছেন।
আমি সেই মুক্তিযোদ্ধা পিতার কথা বলছি, যিনি মুক্তিযোদ্ধাদের পরম বন্ধু ছিলেন।ছিলেন নিরাপদ আশ্রয়স্থল। ছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের পরামর্শদাতা।
সেই নারকীয় দিন:
যুদ্ধের শেষ পর্যায়।স্বাধীনতার সুর্য ধীরে ধীরে উকি দিচ্ছে।১৯৭১ এর ৯ নভেম্বর। রমজান মাস। তিনি রোজা রেখেছেন।অতর্কিত পাক হানাদার বাহিনী তাকে ধরে নিয়ে গেল।টেনে হিচড়ে নেয়া হলো বাড়ির অদুরেই মহাসড়কের পাশে।আরো শতাধিক ব্যক্তিকেও জড়ো করা হয়েছে।একজন অফিসার কমান্ড করলেন,"ফায়ার"।
ঠিক তখনই অগণিত বুলেটের তপ্ত শিসা এসে ভেদ করলো মহান এ গুনী মানুষটির শরীরে।ঝাঁজরা করে ক্ষত বিক্ষত করে দিলো পুরো দেহ। নিস্তেজ হয়ে লুটিয়ে পরলো দেহখানা।লুটিয়ে পরলো শতাধিক ব্যক্তি।দূর আকাশ থেকে খষে পরলো একটি তারা।
তিনি মরে গিয়েও বেচে রইলেন আমাদের মাঝে।
মুক্তিযুদ্ধে আত্বদানকারী আমাদের এই মহান গুনী মানুষটি আর কেউ নন।তিনি আমাদের প্রিয় নেতা, লালমনিরহাটের উজ্জ্বল নক্ষত্র অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু ভাইয়ের পরম শ্রদ্ধেয় পিতা শহীদ আবুল কাশেম মিয়া।
উনি যখন শহীদ হন,তখন দুলু ভাই ছিলেন মাত্র ১২ বছরের কিশোর।বাবার সান্যিধ্য তিনি পাননি। অথচ বাবার আদর্শিক রক্তের প্রবাহে তিনি নিজেকে নিয়ে গেছেন উচ্চ থেকে উচ্চতর জায়গায়।আর হ্যা,বাবার মতোই মানুষ গড়ার কারিগর হয়ে মানুষ সেবার ব্রত নিয়েই আছেন।
পুনশ্চ:এরকম একজন মহান ব্যক্তিকে নিয়ে লিখতে গেলে অল্প কথায় কখনো লেখা সম্ভব নয়।আর একথা ঠিক,জীবিত আবুল কাশেমের চেয়ে মৃত আবুল কাশেম অনেক বেশী শ্রদ্ধার ও স্মরণীয়।
আজ তার ৪৫তম শাহাদাৎ বার্ষিকী।
মহান আল্লাহতায়ালা তাকে বেহেস্ত দান করুন।আমীন।
লালমনিরহাট, ০৯/১১/১৬
(তথ্যসূত্র :বাবাকে যেমন দেখেছি -অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু)
আজ এমন একজন রত্নপিতার গল্প বলবো।
হ্যা,আমি সেই পিতার গল্প বলছি, যিনি শিশুকালেই তার বাবা-মাকে হারিয়েছেন।একমাত্র বড় ভাইয়ের আদর স্নেহে বড় হয়েছেন।হয়েছেন উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত।ভাবতেই অবাক লাগে,১৯২২ সালে জন্ম নেয়া এ মানুষটির গ্রাম থেকে স্কুলের দুরত্ব ছিলো ১২ কিলোমিটার পথ। সেসময় না ছিলো কোন যানবাহন, না ছিলো অবকাঠামোগত কোন উন্নতি।লেখাপড়া নিয়ে মানুষের সেরকম কোন আগ্রহ ছিলোনা।হাতের কাছে ভালো কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও ছিলো না।কিন্তু শিক্ষার আলোয় আলোকিত হবার অদম্য বাসনা যার হৃদয়ে লালিত,তাকে ধরে রাখার সাধ্য কার! বড়বাড়ি থেকে ১২ কিলোমিটার পথ হেটে লালমনিরহাট মডেল স্কুলে ক্লাস করে আবার ১২ কিলোমিটার পথ হেটে বাড়ি ফেরা, সেটা সহজ কোন ব্যাপার না। এই দু:সাহসিক কাজটি তিনি করেছেন,শুধুমাত্র শিক্ষাকে জয় করবার প্রতিজ্ঞা নিয়ে।
উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হলেন।সেসময় ইচ্ছে করলেই সরকারী চাকুরী নিতে পারতেন।হতে পারতেন অনেক বড় কোন কর্মকর্তা। উচ্চ শিক্ষিত লোকের তখন কদর বেশি। সেপথে না গিয়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন গ্রামটিকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার অভিপ্রায়ে পাঙা রানী লক্ষীপ্রিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে মানুষ গড়ার কারিগরে আবির্ভূত হলেন।জীবনের শেয দিন পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবেই নিয়োজিত ছিলেন।
হ্যা আমি সেই পিতার গল্প বলছি,যিনি বড়বাড়ি ইউনিয়নের আজীবন চেয়ারম্যান ছিলেন। মানুষের ভালোবাসা এবং বিশ্বাস এতোবেশী অটুট ছিলো যে,সবসময়ই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হতেন তিনি।
আমি সেই পিতার কথা বলছি,যিনি ১১টি সুযোগ্য সন্তানের জনক। যে সন্তানেরা অকালে পিতাকে হারিয়েও ভেংগে পরেননি। মায়ের সুশীতল ছায়ায় পিতার আদর্শকে লালন করে প্রত্যেকেই এক একটি তারা হয়ে মুক্তোর মতো জ্বল জ্বল করছেন।কেউ দেশে, কেউ বিদেশে নিজ নিজ গুণেই সমাদৃত হয়ে আছেন।
আমি সেই মুক্তিযোদ্ধা পিতার কথা বলছি, যিনি মুক্তিযোদ্ধাদের পরম বন্ধু ছিলেন।ছিলেন নিরাপদ আশ্রয়স্থল। ছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের পরামর্শদাতা।
সেই নারকীয় দিন:
যুদ্ধের শেষ পর্যায়।স্বাধীনতার সুর্য ধীরে ধীরে উকি দিচ্ছে।১৯৭১ এর ৯ নভেম্বর। রমজান মাস। তিনি রোজা রেখেছেন।অতর্কিত পাক হানাদার বাহিনী তাকে ধরে নিয়ে গেল।টেনে হিচড়ে নেয়া হলো বাড়ির অদুরেই মহাসড়কের পাশে।আরো শতাধিক ব্যক্তিকেও জড়ো করা হয়েছে।একজন অফিসার কমান্ড করলেন,"ফায়ার"।
ঠিক তখনই অগণিত বুলেটের তপ্ত শিসা এসে ভেদ করলো মহান এ গুনী মানুষটির শরীরে।ঝাঁজরা করে ক্ষত বিক্ষত করে দিলো পুরো দেহ। নিস্তেজ হয়ে লুটিয়ে পরলো দেহখানা।লুটিয়ে পরলো শতাধিক ব্যক্তি।দূর আকাশ থেকে খষে পরলো একটি তারা।
তিনি মরে গিয়েও বেচে রইলেন আমাদের মাঝে।
মুক্তিযুদ্ধে আত্বদানকারী আমাদের এই মহান গুনী মানুষটি আর কেউ নন।তিনি আমাদের প্রিয় নেতা, লালমনিরহাটের উজ্জ্বল নক্ষত্র অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু ভাইয়ের পরম শ্রদ্ধেয় পিতা শহীদ আবুল কাশেম মিয়া।
উনি যখন শহীদ হন,তখন দুলু ভাই ছিলেন মাত্র ১২ বছরের কিশোর।বাবার সান্যিধ্য তিনি পাননি। অথচ বাবার আদর্শিক রক্তের প্রবাহে তিনি নিজেকে নিয়ে গেছেন উচ্চ থেকে উচ্চতর জায়গায়।আর হ্যা,বাবার মতোই মানুষ গড়ার কারিগর হয়ে মানুষ সেবার ব্রত নিয়েই আছেন।
পুনশ্চ:এরকম একজন মহান ব্যক্তিকে নিয়ে লিখতে গেলে অল্প কথায় কখনো লেখা সম্ভব নয়।আর একথা ঠিক,জীবিত আবুল কাশেমের চেয়ে মৃত আবুল কাশেম অনেক বেশী শ্রদ্ধার ও স্মরণীয়।
আজ তার ৪৫তম শাহাদাৎ বার্ষিকী।
মহান আল্লাহতায়ালা তাকে বেহেস্ত দান করুন।আমীন।
লালমনিরহাট, ০৯/১১/১৬
(তথ্যসূত্র :বাবাকে যেমন দেখেছি -অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু)
0 মন্তব্যসমূহ